জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীক ফেরত: আপিল রায়ের দিন ১ জুন নির্ধারিত
প্রকাশিত: মে ১৪, ২০২৫, ০১:২৭ দুপুর

ফাইল ছবি
রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন ও নির্বাচন কমিশনের বরাদ্দ প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ফিরে পেতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর করা আপিলের রায় ঘোষণা করা হবে আগামী ১ জুন।
বুধবার (১৪ মে) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ শুনানি শেষে এই দিন ধার্য করেন।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি শুরু হলেও তা পরদিন পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। রাজনৈতিক দল হিসেবে বাতিল হওয়া জামায়াতের নিবন্ধন ফেরাতে চলমান এই শুনানি গত ১২ মার্চ শুরু হলেও মাঝপথে দীর্ঘ বিরতি পড়ে।
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির ও ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন।
২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট একটি রিট নিষ্পত্তি করে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করে। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন (ইসি) জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলেও, মূল আইনজীবী অনুপস্থিত থাকায় ২০২৩ সালের নভেম্বরে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বেঞ্চ ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ বলে আপিলটি খারিজ করে দেন। ফলে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকে এবং দলটির নিবন্ধন বাতিলই থেকে যায়।
২০২৩ সালের ২২ অক্টোবর সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগ জামায়াতের খারিজ হওয়া আপিল পুনরুজ্জীবিত করার আদেশ দেন। এর ফলে দলটি আইনি লড়াইয়ের নতুন সুযোগ পায়।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার বিচারপতির বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এরপর রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি ফিরে পেতে নতুন করে শুরু হয় জামায়াতের আইনি লড়াই।
এদিকে চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ২০২৪ সালের ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী ও এর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮(১) ধারা অনুসারে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার।
তবে ঠিক এক মাস পর, ২৮ আগস্ট, সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ফলে দল ও তার সহযোগী সংগঠনগুলোকে ফের কার্যক্রম চালানোর সুযোগ তৈরি হয়।
জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার লড়াই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বাস্তবতা তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ১ জুনের রায়ে যদি দলটি নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পায়, তাহলে আগামী জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন পর্যায়ে দলটির রাজনৈতিক অংশগ্রহণের পথ সুগম হবে।
তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখন আদালতের রায়ের ওপর নির্ভর করছে। আপাতত রাজনৈতিক বিশ্লেষক, দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের চোখ আদালতের ১ জুন ঘোষণার দিকে।
বাংলাধারা/এসআর