ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

রমনা বটমূলে বর্ষবরণ হামলা: ২৩ বছর পর রায়, দুজনের যাবজ্জীবন, ৯ জনের ১০ বছর করে কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: মে ১৩, ২০২৫, ০৬:০১ বিকাল  

ফাইল ছবি

২০০১ সালের বাংলা নববর্ষে রমনার বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বোমা হামলা মামলায় ২৩ বছর পর হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেছে। রায়ে মাওলানা তাজ উদ্দিন ও জুয়েল নামের দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বাকি ৯ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

১৩ মে মঙ্গলবার, বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

এ মামলায় জজ আদালত ২০১৪ সালের ২৩ জুন যে রায় দিয়েছিল, সেখানে আটজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে হাইকোর্ট তাদের আপিলের প্রেক্ষিতে নতুন করে এই রায় দেয়। একই সঙ্গে বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আবেদন খারিজ করা হয়েছে।

হাইকোর্টের রায়ের আগেই এই মামলার অন্যতম আসামি মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। তিনি ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন এবং ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রাতেই তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।
এছাড়া জজ আদালতে যাবজ্জীবন পাওয়া আব্দুর রউফ ও ইয়াহিয়া হাইকোর্টে আপিল শুনানির আগেই মৃত্যুবরণ করেন। ফলে তাদের নাম মামলার কার্যক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ উদযাপনকালে ঢাকার রমনা বটমূলে ছায়ানটের আয়োজনে চলমান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। হামলায় ১০ জন নিহত হন এবং অর্ধশতাধিক আহত হন। দেশজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া, আর বিস্ময়ে হতবাক হয়ে পড়ে জনগণ।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০০৮ সালে এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এর ছয় বছর পর ২০১৪ সালে বিচারিক আদালত রায় দেন। এরপর হাইকোর্টে আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানি চলতে থাকে।

হাইকোর্টের এই রায়কে কেন্দ্র করে অনেকেই বলেছেন, বিচার পেতে দীর্ঘ সময় লাগলেও অবশেষে হামলার ঘটনায় দায়ীদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। যদিও অনেকের মতে, এই দীর্ঘ সময় বিচারের স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেয়।

ছায়ানটসহ দেশের সাংস্কৃতিক কর্মীরা এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে তারা আক্ষেপ করে বলেছেন, যারা একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানকে টার্গেট করে মানুষ হত্যা করেছিল, তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ প্রয়োজন ছিল।

 

বাংলাধারা/এসআর