ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

বিআরটিএ'র ৩৫টি অফিসে দুদকের একযোগে অভিযান: অনিয়মে জড়িত দালাল-চক্র ধরা পড়ছে হাতে-নাতে

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: মে ০৭, ২০২৫, ০১:৫৪ দুপুর  

ফাইল ছবি

ড্রাইভিং লাইসেন্স ও যানবাহনের ফিটনেস সনদ প্রদানসহ বিভিন্ন সেবার নামে ঘুষ লেনদেন ও দালালচক্রের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে দেশের ৩৫টি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কার্যালয়ে একযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (৭ মে) সকাল থেকে ঢাকার উত্তরা, কেরানীগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার বিআরটিএ অফিসে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

দুদকের নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চালানো এই এনফোর্সমেন্ট অভিযানে বিভিন্ন কার্যালয় থেকে দালালদের সরাসরি গ্রাহকের সঙ্গে লেনদেন, হয়রানি ও ঘুষের প্রমাণসহ নানা অনিয়ম শনাক্ত করা হয়েছে।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও সহকারী পরিচালক তানজির আহমেদ জানান, “আজ সারা দেশের ৩৫টি বিআরটিএ অফিসে একযোগে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অভিযান শেষে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে।”

তিনি বলেন, “বিআরটিএ অফিসগুলোতে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আমরা পেয়ে আসছিলাম। বিশেষ করে দালালদের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়, লাইসেন্স প্রক্রিয়ায় ঘুষ নেওয়া এবং ফিটনেস সার্টিফিকেট পাইয়ে দেওয়ার নামে অবৈধ লেনদেন হচ্ছে বলে তথ্য ছিল।”

এ অভিযান শুধু বিচ্ছিন্ন কোনো পদক্ষেপ নয়। এর আগেও চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল সারাদেশের ৩৫টি সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে এবং ২৯ এপ্রিল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ৩৬টি অফিসে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুদক।

দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, একাধিক সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানে ঘুষ, হয়রানি ও দালালচক্রের সক্রিয়তা সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে ফেলছে। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে সংস্থাটি।

বিআরটিএ কার্যালয়গুলোতে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ আসে ড্রাইভিং লাইসেন্স, ফিটনেস সার্টিফিকেট ও রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত সেবায়। এসব সেবা পেতে সাধারণ মানুষকে নিয়মিতই দালালদের দ্বারস্থ হতে হয়। দালালরা অফিসের ভেতরের কিছু অসাধু কর্মচারীর সহযোগিতায় অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে থাকে। এতে যেমন সাধারণ নাগরিকদের হয়রানি বাড়ে, তেমনি সরকারের ভাবমূর্তিও প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

দুদক জানায়, এই অভিযান একটি চলমান প্রক্রিয়ার অংশ। যদি প্রাথমিক অভিযানে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে অনুসন্ধান ও মামলা প্রক্রিয়া শুরু হবে। একইসঙ্গে বিআরটিএ’র মতো জনসেবামূলক দপ্তরগুলোর স্বচ্ছতা নিশ্চিতে নিয়মিত নজরদারি বজায় রাখার কথাও জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিশ্লেষকদের মতে, এসব অভিযান যদি নিয়মিত ও ফলপ্রসূ হয়, তাহলে সরকারী সেবাখাতে ভোগান্তি অনেকটা কমে আসবে এবং জনগণের আস্থা ফিরবে সরকারি দপ্তরগুলোর প্রতি।

 

বাংলাধারা/এসআর