নিশংসতা থামছে না:
গাজায় ড্রোন ও বিমান হামলায় ৮ শিশুসহ নিহত ২৬
প্রকাশিত: মে ১২, ২০২৫, ১০:৪৯ দুপুর

ছবি: সংগৃহিত
ইসরায়েলি বাহিনীর একের পর এক ভয়াবহ হামলায় রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে গাজা উপত্যকা। আশ্রয়হীন ফিলিস্তিনিদের ঘুম ভাঙছে গোলার শব্দে, ঘরভর্তি কান্নায়। গত কয়েক ঘণ্টায় গাজাজুড়ে চালানো ড্রোন ও বিমান হামলায় আরও অন্তত ২৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছে আটটি নিষ্পাপ শিশু।
রবিবার (১১ মে) গভীর রাতে তুরস্কভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, গাজা শহর থেকে খান ইউনিস পর্যন্ত বিস্তৃত একাধিক এলাকায় মূলত বেসামরিক নাগরিক ও শরণার্থীদের ওপরই ছিল হামলার লক্ষ্য।
মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ শহরে সাধারণ মানুষের ভিড়ের ওপর ইসরায়েলি ড্রোন থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন, আহত হন অনেকে। একই শহরের আরেক হামলায় একজন নিহত হন এবং আগের হামলায় গুরুতর আহত আরেকজন হাসপাতালে মারা যান।
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরে আরও ভয়াবহ চিত্র। শরণার্থী একটি তাঁবুতে চালানো হামলায় এক বাবা ও তাঁর ছোট ছেলে নিহত হন। শহরের পশ্চিমাংশে একটি তাঁবুতে ড্রোন হামলায় নিহত হন দুই শিশুসহ চারজন। একইসঙ্গে আল-মাওয়াসি এলাকার দুটি তাঁবুতে পৃথক হামলায় প্রাণ যায় আরও চারজনের, যাদের মধ্যেও রয়েছে দুটি শিশু। পাশের আরেক তাঁবুতে হামলায় আরও এক শিশু প্রাণ হারায়।
ড্রোনের নিশানা থেকে বাদ যায়নি একটি সাইকেল আরোহী তরুণও- মৃত্যু তারও।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূর্ব খান ইউনিসের আবাসান আল-কাবিরা শহরে ইসরায়েলি বাহিনী ঘনঘন গোলাবর্ষণ ও তীব্র গুলিবর্ষণ চালিয়েছে। গাজা শহরে গোলাবর্ষণে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। উত্তরের জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরেও হামলায় গুরুতর আহত হন একজন।
এছাড়া খান ইউনিসে একটি গাড়িকে লক্ষ্য করে চালানো বিমান হামলায় আরও চারজন নিহত হন। গাজা শহরে আরেক হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে একজন কিশোরীও রয়েছে।
ইসরায়েলি আগ্রাসন শুধু প্রাণ নিচ্ছে না, ধ্বংস করে দিচ্ছে জীবনযাপন ব্যবস্থাও। গাজা শহরের আল-তুফাহ এলাকায় একাধিক আবাসিক ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে টানা বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ। একই সময়ে জাবালিয়ার ওল্ড গাজা স্ট্রিটে একটি মসজিদে হামলায় দুজন আহত হয়েছেন।
জাতিসংঘ, মানবাধিকার সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ উপেক্ষা করে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫২ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এর মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু- যাদের নাম নেই, ছবি নেই, অথচ অগণিত স্বপ্নের সমাধি হয়ে যাচ্ছে প্রতিদিনই।
বাংলাধারা/এসআর