ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

উপদেষ্টাদের কাছে স্মারকলিপি প্রদান

সরকারি চাকরি সংশোধন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে কর্মচারীদের বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: জুন ০১, ২০২৫, ০২:১০ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ বাতিলের দাবিতে টানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে সচিবালয়ভিত্তিক সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলো। রোববার (১ জুন) সকাল ১১টায় বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতৃত্বে সচিবালয়ের বাদামতলায় একটি বিক্ষোভ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে নেতৃত্ব দেন ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম। বক্তৃতায় তিনি বলেন, সরকারি চাকরি সংশোধন অধ্যাদেশ একটি কালো আইন। এটি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। আমরা আজীবন অপেক্ষা করব না। ঈদের আগেই সমাধান চাই।

কর্মচারীরা এ সময় ‘অবৈধ কালো আইন বাতিল কর’, ‘অবৈধ কালো আইন মানি না, মানব না’ প্রভৃতি স্লোগানে সচিবালয় প্রাঙ্গণ মুখরিত করেন।

পরে কর্মচারী নেতারা খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদারের দপ্তরে গিয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দেন। এছাড়া রোববারই উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ও সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের কাছেও পৃথক স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

নুরুল ইসলাম জানান, “সোমবার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার কাছেও স্মারকলিপি দেওয়া হবে। পাশাপাশি মাঠপর্যায়ে সংস্থা প্রধানদের মাধ্যমে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছেও দাবি জানানো হবে।”

গত ২৫ মে সন্ধ্যায় চার ধরনের শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই কেবল কারণ দর্শানোর নোটিশে চাকরিচ্যুতির সুযোগ রেখে অধ্যাদেশটি জারি করা হয়। এর আগে ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। পরদিন থেকেই সচিবালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে বিক্ষোভ শুরু করে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

ঐক্য ফোরামের নেতারা বলছেন, এই অধ্যাদেশ প্রয়োগের মাধ্যমে পরবর্তীতে তাদের ওপর একচেটিয়া অভিন্ন নীতিমালা চাপিয়ে দেওয়া হবে। তাই সময়মতো সমাধান না এলে আন্দোলন আরও কঠোর হবে।

কর্মচারী নেতারা আশা প্রকাশ করেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শনিবার দেশে ফেরার পর বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদের মাধ্যমে উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। তখন হয়তো একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে।

এই বিষয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ জানান, কর্মচারীদের দাবি প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরা হবে এবং তার সিদ্ধান্ত অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সচিবালয়সহ সারাদেশে এক ঘণ্টার কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে। আন্দোলনকারীরা বলছেন, ঈদের আগে দাবি না মানা হলে ঈদের পর বৃহত্তর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।

নুরুল ইসলাম বলেন, “আমরা আশাবাদী। যদি সরকার ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দেয়, তাহলে সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করে ঈদ আনন্দে সামিল হবো। তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা পিছু হটব না।”


বাংরাধারা/এসআর