ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

পাটের হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারে প্রধান উপদেষ্টার দৃঢ় আহ্বান

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: জুন ০১, ২০২৫, ০৩:৩১ দুপুর  

ছবি: পিআইডি

দেশের ঐতিহ্যবাহী পাটশিল্পের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে এবং অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত করতে প্রাকৃতিক তন্তু পাটের বহুমুখী ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত চীন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, "যখন আপনি পাটের কথা বলেন, তখন এটি শুধু অর্থনীতির বিষয় নয়—এটি আমাদের আবেগ, আমাদের পরিচয়। বাংলাদেশ একটি অনন্য দেশ, যেখানে বহু বছর ধরে বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক তন্তু উৎপাদিত হয়ে আসছে। কিন্তু আমরা এখনো পাটকে শুধুমাত্র বস্তা তৈরির উপাদান হিসেবেই দেখে আসছি। এটি আমাদের বড় ব্যর্থতা।"

অধ্যাপক ইউনূস জানান, বিশ্বব্যাপী যখন পরিবেশ রক্ষায় সচেতনতা বাড়ছে, তখন পাট হতে পারে একটি টেকসই সমাধান। এই প্রাকৃতিক তন্তুকে পরিবেশবান্ধব উপকরণ হিসেবে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার এখনই সময়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "আমরা চাইলে আবারও পাটের গৌরব ফিরিয়ে আনতে পারি। এর জন্য দরকার পরিকল্পিত উদ্যোগ ও উদ্ভাবনী চিন্তা। আজকের এই সম্মেলন হতে পারে নতুন এক যাত্রার সূচনা, যেখানে পাট থাকবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে।"

তিনি ঢাকাই মসলিনের হারানো ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করে বলেন, "এক সময় মসলিন ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে খ্যাতনামা ও দামি কাপড়। আমরা সেটা হারিয়ে ফেলেছি। এখন আমাদের উচিত পাটকে ঘিরে এমন একটি সম্ভাবনার ক্ষেত্র তৈরি করা, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আবারও বাংলাদেশের গৌরবের ইতিহাস গড়তে পারে।"

চীন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন চীনের ১০০টিরও বেশি কোম্পানির প্রায় ২৫০ জন বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী।

অনুষ্ঠানে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিরাও বক্তব্য রাখেন। তাঁরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা এবং বিশেষ করে পরিবেশবান্ধব খাতে চীনের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট এবং প্লাস্টিকবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে পাটের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। একে শুধু কৃষিপণ্য হিসেবে না দেখে টেকসই উন্নয়নের অংশ হিসেবে বিবেচনা করলে বাংলাদেশ বৈশ্বিক নেতৃত্ব দিতে পারে।

সম্মেলনের মাধ্যমে পাটখাতে বিনিয়োগ, প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং গবেষণা সহযোগিতার নতুন দ্বার খুলে যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন আয়োজকরা।


বাংলাধারা/এসআর