ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা: আরব বিশ্বের তীব্র প্রতিক্রিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

 প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২৫, ০৭:২৯ বিকাল  

ছবি: সংগৃহিত

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। ইরান ও ইসরায়েলের চলমান সংঘাতে এবার সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা স্পষ্ট হলো। শনিবার মধ্যরাতে ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বিমান বাহিনী। হামলার পরপরই বিশ্বজুড়ে কূটনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। বিশেষ করে আরব বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলো একে একে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে উদ্বেগ, নিন্দা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার শঙ্কা।

ওমান: 
পারমাণবিক ইস্যুতে ওমান দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে সংলাপের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করে আসছে। এ ধরনের সংলাপের পক্ষপাতী দেশটি মার্কিন হামলার কড়া সমালোচনা করেছে। ওমানের সুলতান এক বিবৃতিতে বলেন, “এই সরাসরি সামরিক আগ্রাসন আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলবে এবং আমরা এ ধরনের উত্তেজনামূলক পদক্ষেপের নিন্দা জানাই।”

সৌদি আরব: 
যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র হলেও সৌদি আরব এবারের ঘটনায় ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা শুধু একটি দেশের স্থাপনায় নয়, তার সার্বভৌমত্বের ওপরও আঘাত। এই ধরনের হামলা মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা আরও বাড়িয়ে তুলবে।”

কাতার: 
কাতারের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, “এই মুহূর্তে মধ্যপ্রাচ্যে এমনিতেই নিরাপত্তাজনিত চাপ বিরাজ করছে। তার মধ্যে এ ধরনের আগ্রাসন পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে। এর প্রভাব শুধু আঞ্চলিক নয়, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।” কাতার সব পক্ষকে সংযম ও বিবেচনার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে।

মিশর: 
মিশর এই হামলার কঠোর সমালোচনা করে বলেছে, “এই অঞ্চলে সামরিক সমাধান কখনোই কার্যকর হতে পারে না। সমস্যা যত জটিলই হোক, তার উত্তরণ একমাত্র সম্ভব রাজনৈতিক সংলাপ ও কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে।” মিশর মনে করে, এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতাকে বিপন্ন করছে।

লেবানন: 
লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন বলেন, “এই বোমা হামলা শুধু ইরান নয়, পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এ ধরনের পদক্ষেপ চলমান উত্তেজনাকে আরও উসকে দেবে এবং আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।”

যুক্তরাষ্ট্রের এই সামরিক পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বড় ধরনের অভিঘাত তৈরি করেছে। একদিকে পারমাণবিক ইস্যুতে উত্তেজনার মাত্রা চরমে পৌঁছেছে, অন্যদিকে আরব বিশ্বে বাড়ছে উদ্বেগ ও নিরাপত্তাজনিত অস্থিরতা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই হামলা কেবল ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কেই নয়, গোটা মধ্যপ্রাচ্যের কৌশলগত ভারসাম্যকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। সবারই চোখ এখন ভবিষ্যৎ প্রতিক্রিয়া এবং কূটনৈতিক পরিসরে কী ঘটছে তার দিকে।

 

বাংলাধারা/এসআর