ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ ঘিরে মতপার্থক্য: আখতার, সারজিস ও হাসনাতের আপত্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২৫, ১১:০৯ রাত  

ছবি: সংগৃহিত

৮ আগস্টকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ ঘোষণাকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরলপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সদস্য সচিব আখতার হোসেন, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম এবং দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ স্পষ্টভাবে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া পৃথক পোস্টে তারা ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ ঘোষণার সময় ও প্রেক্ষাপট নিয়ে নিজেদের আপত্তি প্রকাশ করেন।

বিকেলে দেওয়া পোস্টে আখতার হোসেন লেখেন, নতুন বাংলাদেশ দিবস তখনই অর্থবহ হবে, যেদিন জুলাই ঘোষণাপত্র সামনে আসবে, এবং মৌলিক সংস্কারের ভিত্তিতে জুলাই সনদ গৃহীত হবে। এখনই দিবস ঘোষণায় জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে খাটো করা হচ্ছে।

এদিকে কাছাকাছি সময়ে হাসনাত আবদুল্লাহ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, নতুন বাংলাদেশের জন্ম ৮ আগস্টে নয়, ৫ আগস্টেই। ৫ আগস্ট ছিল সাধারণ ছাত্র ও জনতার বিজয়ের দিন। সেই ঐতিহাসিক অর্জনকে পরবর্তী সরকারের কুক্ষিগত করার অপচেষ্টা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

রাতের দিকে সারজিস আলম তার ভেরিফায়েড পেজে লিখেন, ৮ আগস্ট থেকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা শুরু হয়নি; বরং ওই দিন থেকেই বিপ্লবকে ছাড় দেওয়া ও আপসের পালা শুরু হয়। আমাদের স্বাধীনতা এসেছে ৫ আগস্টে- সেদিনই ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ এবং ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া উচিত।

প্রসঙ্গত, বিগত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার টানা আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। এর তিন দিন পর, ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়।

গতকাল (২৫ জুন) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এক প্রজ্ঞাপনে ৫ আগস্টকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ এবং ৮ আগস্টকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে এ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে দিবস নির্ধারণের পদ্ধতি ও তাৎপর্য।

নাগরিক সমাজের একাংশ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও মনে করছেন, কোনো দিবসের ঘোষণা তখনই গ্রহণযোগ্য হয়, যখন তা জনমতের প্রতিফলন হিসেবে আসে। আর ইতিহাসের মালিকানা জনগণের; তা কোনো সরকার বা প্রশাসনের একতরফা সিদ্ধান্তে নির্ধারিত হতে পারে না।

এই প্রেক্ষাপটে ‘নতুন বাংলাদেশ’ নির্মাণের পথে দিবস নির্ধারণের বিষয়টিও যেন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও সর্বসম্মত ঐকমত্যের ভিত্তিতেই চূড়ান্ত হয়- এমন প্রত্যাশাই এখন সাধারণ নাগরিকদের কণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।


বাংলাধারা/এসআর