এয়ার টিকিট বাজারে ফের সিন্ডিকেটের দখল, উদ্বেগে আটাব
প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২৫, ০১:৪৫ রাত

ছবি: সংগৃহিত
বাংলাদেশের আকাশপথের টিকিটের বাজার আবারও সিন্ডিকেটের দখলে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)। শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের গন্তব্যগুলোর টিকিট নিয়ে নতুন করে কারসাজি শুরু হয়েছে, যা টিকিটের দাম লাগামহীনভাবে বাড়িয়ে দিচ্ছে।
আটাবের তথ্যমতে, গত ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা-রিয়াদ, জেদ্দা, মদিনা এবং দাম্মাম রুটের টিকিট ‘গ্রুপ বুকিং’-এর নামে প্রাথমিকভাবে প্রায় এক লাখ টাকায় বিক্রি হলেও, এয়ারলাইন্সের কম্পিউটার সিস্টেমে সেই টিকিটের দাম দেখানো হয়েছে এক লাখ ৭০ হাজার থেকে এক লাখ ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
এর আগে আকাশপথের টিকিটের বাজারে শৃঙ্খলা ফেরাতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি এক পরিপত্র জারি করেছিল। সেখানে যাত্রীদের নাম, পাসপোর্টের তথ্য এবং পাসপোর্টের ফটোকপি জমা দিয়ে টিকিট বুকিংয়ের নিয়ম বাধ্যতামূলক করা হয়। এতে কিছুদিনের জন্য বাজারে দাম কিছুটা কমলেও, সম্প্রতি কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যগামী বাজেট এয়ারলাইন্স এবং সিন্ডিকেট চক্র আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছে আটাব।
সংগঠনটির অভিযোগ, কিছু এয়ারলাইন্স ভুয়া নামে টিকিট বুক করে রাখছে। পরে ফ্লাইটের এক-দুই দিন আগে সেই টিকিটের যাত্রীদের নাম পরিবর্তন করে চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে। সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে এয়ারলাইন্স, গ্লোবাল সেলস এজেন্ট (জিএসএ) এবং সিন্ডিকেট চক্র মিলে আবারও ‘গ্রুপ বুকিং’-এর নামে যাত্রীবিহীন টিকিট ব্লক করছে। এর ফলে বাজারে কৃত্রিমভাবে আসন সংকট তৈরি হয়ে এয়ার টিকিটের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ যাত্রী, বিদেশগামী শ্রমিক এবং দেশের ট্রাভেল এজেন্সিগুলো। আটাবের আশঙ্কা, বাজারে সরকারি নজরদারি এবং কঠোর আইন প্রয়োগ না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কিছু এয়ারলাইন্স বিদেশি এজেন্সির কাছে নামবিহীনভাবে টিকিট ব্লক করে রাখছে। সেই টিকিট আবার দেশে সিন্ডিকেট এজেন্সি এবং দালালদের মাধ্যমে বিক্রি করা হচ্ছে। এর পেছনে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগও তুলেছে সংগঠনটি।
এছাড়া বিভিন্ন এয়ারলাইন্স ফ্লাইট সংখ্যা কমিয়ে আনায় আসন সংকট তৈরি হচ্ছে, যা টিকিটের দাম বৃদ্ধির আরেকটি বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে আটাব। সংগঠনটি সরকারের জারি করা নির্দেশনা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছে তারা।
বাংলাধারা/এসআর