ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

ফিফার অনুমোদন

"সব বাধা কাটিয়ে লাল-সবুজের পথে সামিত সোম"

স্পোর্টস্ ডেস্ক

 প্রকাশিত: মে ০৬, ২০২৫, ০৯:৫৪ রাত  

ছবি: সংগৃহিত

বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার প্লেয়ার স্ট্যাটাস কমিটি আজ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে (বাফুফে) একটি চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে, সামিত সোম বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারেন। অর্থাৎ, আগামী ১০ জুন ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সামিতকে দলে রাখা নিয়ে আর কোনো আইনি জটিলতা রইল না।

এই চমকপ্রদ উন্নয়নের পেছনে আছে এক টানা কৌশলগত ও প্রশাসনিক উদ্যোগ। বাফুফের সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম যিনি শুরু থেকেই প্রক্রিয়াটির সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত ছিলেন, তিনি বলেন,

“মাত্র কিছুক্ষণ আগে ফিফার পক্ষ থেকে চিঠি পেয়েছি। সামিতের বিষয়টি নিয়ে এখন আর কোনো আনুষ্ঠানিকতা বাকি নেই।”

যদিও ফিফার চিঠিতে নির্দিষ্ট করে “বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারবে” এমন কোনো বাক্য থাকে না, তবে আইনের নির্দিষ্ট ধারা উল্লেখ করে ফুটবল সংস্থাটি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দেশের বিবেচনার ওপর ছেড়ে দেয়। এই ব্যাখ্যার ভিত্তিতেই বাফুফে এখন সামিতকে মাঠে নামাতে আইনত সক্ষম।

এই সিদ্ধান্ত আসতে সময় লেগেছে মাত্র ২৪ ঘণ্টা- যা ফিফার সাধারণ প্রক্রিয়ার তুলনায় অনেক দ্রুত। কেন এত দ্রুত অনুমোদন?

ফাহাদ করিম জানান, সামিতের বাবা-মা দুজনই জন্মসূত্রে বাংলাদেশি, অর্থাৎ তার ‘অরিজিন’ খুবই পরিষ্কার। দ্বিতীয়ত, তিনি কানাডা জাতীয় দলে খেললেও তা অফিসিয়াল (কম্পেটিটিভ) ম্যাচ ছিল না। ফলে নিয়ম অনুযায়ী ফিফার স্ট্যাটাস কমিটি দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছে।”

এ ছাড়া বাফুফে সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন ফিফার সংশ্লিষ্ট বিভাগে সরাসরি যোগাযোগ রেখেছিলেন যাতে বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি হয়।

তুলনামূলকভাবে বলা যায়, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ফুটবলার হামজা চৌধুরীর ক্ষেত্রে ফিফার ছাড়পত্র পেতে সময় লেগেছিল প্রায় চার মাস। সেখানে সামিতের জন্য এটি এসেছে এক দিনেই। ফুটবল প্রশাসনের দক্ষতা ও সমন্বিত প্রচেষ্টার এটি একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত ১১ এপ্রিল সামিত বাংলাদেশের হয়ে খেলার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এরপর মাত্র ২৫ দিনের মধ্যে জন্মনিবন্ধন, বাংলাদেশি পাসপোর্ট, কানাডার ফুটবল সংস্থার অনাপত্তিপত্র এবং ফিফার অনুমোদন—সবই সম্পন্ন করেছে বাফুফে। বিশেষ করে, পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার এক দিনের মাথায় ফিফার ক্লিয়ারেন্স পাওয়া রীতিমতো নজিরবিহীন।

২০১৩ সালে ডেনমার্ক প্রবাসী জামাল ভূঁইয়ার হাত ধরে জাতীয় দলে প্রবাসী ফুটবলারদের যাত্রা শুরু হয়েছিল। এরপর একে একে এসেছেন তারিক কাজী (ফিনল্যান্ড), রাহবার খান ও কাজেম শাহ (কানাডা), এবং সর্বশেষে হামজা চৌধুরী (ইংল্যান্ড)। এখন সেই তালিকায় যুক্ত হলেন সামিত সোম।

বাংলাদেশ জাতীয় দলের এই বৈচিত্র্যময় রূপ যে শুধু প্রতিভায় নয়, কৌশলে ও প্রস্তুতিতেও আরও সমৃদ্ধ হচ্ছে, সেটিই যেন স্পষ্ট হয়ে উঠছে সামিতের অন্তর্ভুক্তির মধ্য দিয়ে।

 

বাংলাধারা/এসআর