ঢাকা, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২

গাজায় গণহত্যা নিয়ে যারা নীরব, তারাই এর সঙ্গে জড়িত: এরদোয়ান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

 প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ০৯:২৯ সকাল  

ছবি: সংগৃহিত

গাজায় চলমান গণহত্যা নিয়ে যারা নীরব ভূমিকা পালন করছে, তারা আসলে সেই অপরাধের সঙ্গেই জড়িত, এমন কঠোর মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা শিল্প মেলা ‘আইডিইএফ ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানির প্রেক্ষাপটে এরদোয়ান বলেন, “গাজায় যে গণহত্যা চলছে, তা নিয়ে চুপ থাকা মানেই সেই অপরাধে জড়িত থাকা।”

তিনি আরও বলেন, “মানবতা যখন নিপীড়িত হয়, তখন যারা মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকে, তারা ন্যায়ের নয়, বরং জুলুমের পক্ষে দাঁড়ায়। তুরস্ক এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবসময় সরব থাকবে।”

অনুষ্ঠানে এরদোয়ান আরও বলেন, তুরস্ক এখন আর কারও মুখাপেক্ষী নয়। নিজেদের প্রযুক্তি, শক্তি ও সক্ষমতার ওপর দাঁড়িয়ে বিশ্বে নতুন পরিচিতি তৈরি করছে দেশটি।

তিনি বলেন, “আজ আমরা শুধু একটি প্রতিরক্ষা শিল্পের অগ্রগতি নয়, বরং একটি জাতির স্বাধীনতার পথে এগিয়ে চলার চিত্র দেখছি। নিষেধাজ্ঞা, কূটনৈতিক চাপ আর বৈষম্যমূলক নীতির বাধা পেরিয়ে তুরস্ক আজ প্রতিরক্ষা খাতে বৈশ্বিক শক্তি হয়ে উঠছে।”

সাইপ্রাস সংকট ও সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের সময় মিত্র দেশগুলোর ভূমিকাও তুলে ধরেন এরদোয়ান। তিনি অভিযোগ করেন, “১৯৭৪ সালে সাইপ্রাসে শান্তি অভিযান চালানোর পর তুরস্কের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। বিদেশে পাঠানো যুদ্ধবিমান আটকে রাখা হয়েছিল, এমনকি সেগুলো রাখার জন্য ভাড়াও দিতে হয়েছিল আমাদের।”

তিনি বলেন, “যখন আমরা নিজেদের প্রতিরক্ষা উন্নয়নের উদ্যোগ নিই, তখন আমাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। একসময় আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করা হতো, অথচ সেই সময়েই আমাদের কাছ থেকে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।”

এই অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়েই তুরস্ক আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠে বলে জানান প্রেসিডেন্ট। তার ভাষায়, “তুরস্ক এখন নিজের শক্তির ওপর দাঁড়িয়ে, নিজের প্রযুক্তিতে বিশ্বে পরিচিত হয়ে উঠছে।”

এরদোয়ান বলেন, দেশটি শুধু প্রতিরক্ষা খাতেই নয়, একটি মানবিক ও সক্রিয় পররাষ্ট্রনীতির দিকেও এগিয়ে যাচ্ছে।

গাজা প্রসঙ্গে এরদোয়ান বলেন, “একটি শিশু যখন ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকে, একটি মা যখন নিজের সন্তানের লাশ খুঁজে ফেরে, তখন নিরব থাকা যায় না। যারা নিরব থাকে, তারা ইতিহাসের কাছে জবাবদিহি এড়াতে পারবে না।”

বিশ্লেষকদের মতে, প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক পরিসরে গাজা পরিস্থিতি নিয়ে তুরস্কের দৃঢ় অবস্থান এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে তার নেতৃত্বের প্রতিচ্ছবি।

বাংলাধারা/এসআর