ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২

হাসপাতালে ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরে আছেন পরীমণি 

বিনোদন ডেস্ক:

 প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ০৫:০৪ বিকাল  

ছবি: সংগৃহিত

উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে শিশুসহ ৩১ জনের প্রাণহানির ঘটনায় গোটা দেশ যেন স্তব্ধ। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে দেশের ইতিহাসে এমন হৃদয়বিদারক বিমান দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়নি কেউ। শোকের ছায়া নেমে এসেছে জনমনে, বেদনাবিধুর সেই আবহে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন চিত্রনায়িকা পরীমণি।

মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী। জানা গেছে, ছোটবেলা থেকেই আগুনের প্রতি এক ধরনের ভয় এবং ট্রমা বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। মাইলস্টোনে পুড়ে যাওয়া শিশুদের ছবি ও ভিডিও দেখেই ভয়ংকর প্যানিক অ্যাটাকে আক্রান্ত হন পরীমণি। সোমবার রাতেই তাকে ভর্তি করা হয় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে।

পরীর ফেসবুক পেজে রাতেই একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়। সেখানে দেখা যায়, হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছেন তিনি, হাতে ক্যানোলা আর স্যালাইনের টিউব। পাশে বসে রয়েছে তার একমাত্র ছেলে পুণ্য। মায়ের শিয়রের কাছে বসে থাকা ছোট্ট শিশুটিকে বারবার বুকের মধ্যে টেনে নিচ্ছেন পরীমণি, যেন তাকে জড়িয়ে ধরে নিজেকে সামলে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

ভিডিওর ক্যাপশনে পরীমণি লিখেছেন, “সব সময় কি সব ইমোশন কন্ট্রোল করা যায়? যায় না তো।” এই একটি বাক্যে ফুটে উঠেছে এক মায়ের মনের ভাঙচুর, আতঙ্ক আর অসহায়ত্ব।

এর আগে নিজের স্ট্যাটাসে পরীমণি লিখেছিলেন, “আমার আগুনের একটা ট্রমা আছে ছোটোবেলা থেকে। সেটা যে এখনও এত ভয়ংকরভাবে আছে, তা বুঝতে পারি নাই। গতকালের দুর্ঘটনায় ছোট ছোট বাচ্চাগুলোর পোড়া শরীরের ছবি/ভিডিও দেখে আমার খুব খারাপভাবে প্যানিক অ্যাটাক হয়! রাতে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। বুকের ভেতর ধরফর করে শুধু। আহারে, এই শোক ওই মায়েরা কিভাবে সহ্য করবে আল্লাহ! আল্লাহ আল্লাহ……!”

পরীমণির এই ভিডিও দেখে নেটিজেনরাও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন। কেউ কেউ লিখেছেন, “বাবাটার (ছেলে পুণ্য) জন্য হলেও সুস্থ থাকো আপু। ওর আর কে আছে তুমি ছাড়া?” অনেকে আবার জানিয়েছেন, এ ধরনের ভয়াবহ ঘটনার পর একজন মায়ের এমন মানসিক অবস্থাই স্বাভাবিক।

পরীমণি শুধু একজন অভিনেত্রী নন, তিনি একজন মা—সেই মাতৃত্বের ভালোবাসা, অসহায়ত্ব আর ভয় মিলেমিশে যেন প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে হাসপাতালের সেই ভিডিওতে। সন্তানকে বুকের মধ্যে জড়িয়ে রেখে নিজের ভয় কাটানোর এই দৃশ্য কোটি মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।

জাতি আজ শোকে মুহ্যমান, আর সেই শোকের গভীরতা যে কতটা তীব্র হতে পারে, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন পরীমণি। সন্তান হারানো মায়েদের যন্ত্রণার কিছুটা হলেও যেন অনুভব করেছেন তিনি। এবং সেই অনুভব ছড়িয়ে দিয়েছেন একটি ভিডিওর মধ্য দিয়ে যা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, এমন দুর্ঘটনার প্রভাব কেবল ঘটনাস্থলেই সীমাবদ্ধ থাকে না, ছড়িয়ে পড়ে হাজারো হৃদয়ে।

বাংলাধারা/এসআর